নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর মধ্যেও গত সেপ্টেম্বরে আইওএসের আপডেটেড ভার্সন বাজারে এনেছে অ্যাপল। আইওএস ১৪.০.১ নামের হালনাগাদ এ ভার্সন আইফোন ও আইপ্যাডে যুক্ত করেছে নতুন অনেক ফিচার। এনেছে ভিন্নতা। আইফোন ও আইপ্যাড ব্যবহারকারীরা আগে নিজেদের পছন্দমতো হোমস্ক্রিন বদলাতে পারতেন না। আইওএসের আপডেটেড ভার্সনযুক্ত ডিভাইসে এ সুবিধা রাখা হয়েছে। আর এতেই কপাল খুলেছে ট্র্যাফ নামের এক ডিজাইনারের। আইওএসের আপডেটেড ভার্সনের আদলে অ্যাপ আইকন বানিয়ে তিনি এক সপ্তাহের কম সময়ে এক লাখ ডলারের বেশি আয় করেছেন। টুইটার বার্তায় সৃজনশীল এ অনলাইন ডিজাইনার নিজেই লাখ ডলার আয়ের তথ্য জানিয়েছেন। খবর বিবিসি ও সিএনবিসি।
অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ব্যবহারকারীদের রুচি ও পছন্দমতো হোমস্ক্রিন বদলে ফেলা খুব কঠিন কিছু নয়। তবে আইফোন ও আইপ্যাডের ক্ষেত্রে এতদিন এ সুযোগ ছিল না। বরং এক্ষেত্রে অ্যাপলের আগে থেকে নির্দিষ্ট করা হোমস্ক্রিন ব্যবহার করতে হতো। অ্যাপলের ডিভাইস ব্যবহারকারীদের হোমস্ক্রিনের ক্ষেত্রে ভিন্নতা আনতে আইওএস ১৪ আপডেটেড ভার্সনে যুক্ত করা হয়েছে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ডিজাইন। যুক্ত হয়েছে নানা ধরনের আইকন। এমনই কিছু অ্যাপ আইকনের ডিজাইন করেছেন ট্র্যাফ নামের অনলাইন ডিজাইনার।
টুইটার বার্তায় তিনি জানান, আইওএস ১৪ আপডেটেড ভার্সনের আদলে অ্যাপ আইকন বানিয়ে তিনি ৭৭ হাজার পাউন্ড বা ১ লাখ ডলারের বেশি আয় করেছেন। তা-ও মাত্র ছয়দিনে। তিনি টুইটে তার বানানো অ্যাপ আইকনের কিছু ছবি যুক্ত করেছেন। অল্প সময়ের মধ্যে তার এ টুইট নেটিজেনদের নজর কেড়েছে।
এর পর পরই জনপ্রিয় ইউটিউবার মার্কোজ ব্রাউলিকে দেয়া সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, আমি সঠিক সময়ে সঠিক জিনিসের ডিজাইন করতে সক্ষম হয়েছি। এটা ডিভাইসের হোমস্ক্রিনকে একদম বদলে দিয়েছে। রঙিন এসব আইকন ব্যবহারকারীরা বেশ পছন্দ করেছেন। অনেকেই এর স্ক্রিনশট তুলে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।
নিজের টুইট ও তাকে নিয়ে ইউটিউবের টেক রিভিউয়ার মার্কোজ ব্রাউলির কনটেন্ট প্রকাশের পর নেটিজেনদের কাছ থেকে সাড়া পেয়ে ট্র্যাফ অল্প সময়ের মধ্যে নিজের মতো করে কিছু অ্যাপ আইকনের ডিজাইন করেন। তবে আদলটা আইওএস ১৪ ভার্সনের মতো রাখেন। পরবর্তী সময়ে এসব অ্যাপ আইকন নিজের অনলাইন পেজে বিক্রির জন্য তোলেন। এরপর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। মাত্র ছয় দিনে তিনি ৩ হাজার ৬২৬ জন ক্রেতা পেয়েছেন। আয় করেছেন ১ লাখ ১ হাজার ৫২৮ ডলার।
২০১৩ সালে আইফোনের সফটওয়্যার রেসট্রিকশনস রিমুভ করার জন্য জেলব্রেকিং নামের একটি ফিচার ভাইরাল হয়। ওই ফিচারের আইকন তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ট্র্যাফ। দাম ছিল মাত্র ১৭ ডলার। ওই প্রকল্পের কাজ থেকে তিনি বুঝতে পারেন তুলনামূলক সস্তায় যেকোনো ফিচার কিংবা আইকন ব্যবহারকারীদের হাতে তুলে দিতে পারলে তারা লুফে নেবেই। এ চিন্তা থেকে তিনি আইওএস ১৪ ভার্সনের আদলে মাত্র ২৮ ডলারের বিনিময়ে অ্যাপ আইকন বাজারে ছাড়েন। এর সুফলও পেয়েছেন হাতেনাতে।
উল্লেখ্য, প্রতি বছরই সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে নতুন সিরিজের প্রযুক্তি পণ্য ও সেবা বাজারে আনে অ্যাপল। তবে নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী এবার ভিন্ন ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এ কারণে চলতি বছর অ্যাপলের নতুন পণ্য ও সেবা বাজারে আসা নিয়ে সংশয় ছিল। তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর আইওএস ১৪ আপডেটেড ভার্সন বাজারে আনে প্রতিষ্ঠানটি।
এতে আইম্যাসেজের গ্রুপ চ্যাটে নির্দিষ্ট কারো বার্তার রিপ্লাই দিতে ট্যাগ করার সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। যাদের সঙ্গে বার্তা আদান-প্রদান বেশি হয়, তাদের নাম পিন করে রাখার সুবিধা দেয়া হয়েছে। ট্রান্সলেট নামের একটি বিল্ট-ইন অ্যাপ ব্যবহারের সুবিধা দিয়েছে অ্যাপল। এতে ইংরেজি, চীনা, ফরাসি, জার্মান, আরবিসহ ১১টি ভাষায় ভয়েস-টু-টেক্সট সুবিধা ব্যবহার করে অনুবাদের সুযোগ রয়েছে।