পড়াশোনা, ব্যবসা বা ভ্রমণের জন্য অনেকেই দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ান। অনেকেই আবার টার্গেট করে নির্দিষ্ট দেশে যাওয়ারও প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। যেমন- যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি গ্রহণ করে নিজেকে প্রস্তুত করেন এবং ভিসার আশায় বসে থাকেন। কিন্ত এখন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়।
শুধু তাই নয় দেশটি এখন সোশ্যাল মিডিয়ার ওপরও নজরজাদি চালায়। ভিসা আবেদনকারীর নানা পোস্ট নিয়ে তারা গবেষণা করে। আর এখন দেশটির ভিসা পেতে সোশ্যাল মিডিয়ার বিস্তারিত তথ্য সংযোজনও বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে। তাই আবেদনকারীর পোস্টে যদি বিতর্কিত কোনো ইস্যু থাকে, তাহলে চাইলেই তারা ভিসা বাতিল করে দিতে পারে।
এজন্য যাদের টার্গেট যুক্তরাষ্ট্র যাবেন,তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেওয়া নিয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আর অবশ্যই জেনে নিতে হবে, কোন ধরনের পোস্ট একেবেরেই দেওয়া যাবে না।
চলুন জেনে নেই,কোন কোন পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় করা যাবে না:
রাজনৈতিক পোস্ট
যারা যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চান, তাদের কাছে ওই দেশ সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে করা পোস্ট বিশ্লেষণ করে মনোভাব বুঝতে চাওয়া হয়। সেক্ষেত্রে সবার আগে দেশটির রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এজন্য এধরনের পোস্ট করা থেকে বিরত থাকতে হবে। শুধু তাই নয়, দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে তৈরি মিম, বিকৃত ছবি বা কোনো মন্তব্য শেয়ার করা বা রিটুইট করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নীতিমালার সমালোচনা করা যাবে না। যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী কোনো পোস্টও করা যাবে না।
সহিংস পোস্ট
যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চাইলে ফেসবুকে কোনো সহিংস পোস্ট দেওয়া বা পোস্ট শেয়ার করা যাবে না। বিশেষ কোনো গোষ্ঠীকে উদ্দেশ্য করে বা সহিংসতার সমর্থনে কোনো পোস্ট দিলে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, টুইটার ও ফেসবুকে কারও প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশ করে পোস্ট দিলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ তাও বিশেষভাবে খতিয়ে দেখে। ফলে ভিসা প্রাপ্তির সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।
হইহুল্লোড়
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ যদি পড়াশোনা বা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে চায়, তাহলে বন্ধুদের নিয়ে হইহুল্লোড় করে পার্টি করা, মাদক গ্রহণের ছবি বা তথ্য প্রকাশ করলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। এমনকি অ্যালকোহল, গাঁজা, ধূমপানের ছবিতেও সন্দেহ তৈরি পারে। আর তা নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও পড়তে হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার ঘোষণা
অনেকে আবার দেশটিতে ভুসা পাওয়ার পর ফেসবুক বা টুইটারে ‘আমেরিকা যাচ্ছি, সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করব’—এ ধরনের পোস্ট দেন। অথবা কমেন্টে এসব নিয়ে আলোচনা করেন। যাঁদের লেখাপড়া বা কাজ শেষে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার বাসনা রয়েছে, তাঁদের ভিসা পাওয়া কঠিন। এজন্য এসব বিষয় নিয়ে কখনো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ঠিক নয়।
অশ্লীল পোস্ট
ফেসবুক টাইমলাইনে অনেকেই অশ্লীল পোস্ট বা কারও ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উল্টাপাল্টা পোস্ট দেন। তবে এখন এসব থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা ফেসবুকে রাগের বা ক্ষিপ্ত হওয়ার ছবি বা ভিডিও পোস্ট দেওয়া,অশ্লীল ছবি, ভিডিও বা মন্তব্য সেখানে রাখা সবচেয়ে বড় বোকামি। অভিবাসন কর্তৃপক্ষ এসব পোস্ট দেখে ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে একটা ধারণা নেয়। এজন্য ফেসবুকে যেসব পোস্ট নিজের ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তোলে, সেসব পোস্ট টাইমলাইনে রাখতে হবে।
পোস্ট মুছলে সন্দেহ বাড়ে
অনেকে আবার যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে টাইমলাইনে কোনো বিতর্কিত পোস্ট মুছে ফেলেন। আর এখানেই সবচেয়ে বড় ভুল করে থাকেন। কেননা পোস্ট মুছে দিলে সন্দেহ আরও বাড়ে। তাই পোস্ট মুছে ফেলা বা পোস্ট শুধু প্রাইভেট করে ফেললে অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দিতে পারবেন না। এজন্য কোনো পোস্ট দেওয়ার আগে চিন্তা করা উচিত।
সূত্র: গ্যাজেটস নাউ